চট্টগ্রামের ছেলে পারভেজ হোসেন ইমন ছোটবেলা থেকেই তামিম ইকবালের ভক্ত। দেশের এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটারের আগ্রাসী ব্যাটিং মুগ্ধ করত তাকে, আর সেই ছোঁয়া নিয়েই বেড়ে উঠেছেন ইমন।
২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে ৬০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দেশের হয়ে একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন তামিম। তবে শনিবার (১৭ মে) সেই রেকর্ডে নতুন নাম লিখিয়েছেন পারভেজ ইমন। ৫৩ বলে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন ইতিহাস, যেখানে ছিল অসাধারণ পাওয়ার হিটিং আর নিখুঁত প্লেসমেন্টের ছাপ। সেই সঙ্গে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৯টি ছক্কা হাঁকানো প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটারও হয়ে গেছেন তিনি। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে, প্রিয় ব্যাটার তামিম ইকবালের পাশে নিজের নাম দেখতে পারাটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন ইমন।
ম্যাচ শেষে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়ে ইমন বলেন, “হ্যাঁ, আমি জানতাম তামিম ভাই ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। আমি চেষ্টা করি তার সব ম্যাচ দেখার। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগছে সেঞ্চুরি করতে পেরে। বাসায় ফিরে যখন জানলাম এটা দেশের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি, তখন আরও আনন্দ পেলাম। কারণ ছোটবেলায় যার খেলা দেখে বড় হয়েছি, আজ তার পাশেই আমার নাম।''
তবে ইমনের ঝড়ো ইনিংস সত্ত্বেও বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ২০০ ছাড়াতে পারেনি। তাওহীদ হৃদয় ছাড়া আর কেউই ২০ রানের কোটা ছুঁতে পারেননি। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে একাই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ইমন।
"উইকেট পড়ছিল, কিন্তু আমি চেষ্টা করছিলাম নিজের খেলার ধারা না পাল্টাতে," বলেন ইমন। "আমি জানতাম আমাকে ম্যাচটা গভীরে নিতে হবে। নিজের সর্বোচ্চটা দিতে চেয়েছি।"
অন্যদিকে, বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস ম্যাচ শেষে বলেন, জয়টা ভালো হলেও উন্নতির জায়গা এখনও রয়েছে। "নিশ্চয়ই এটা ভালো সংগ্রহ ছিল। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ ছিল এবং ইমন যেভাবে ব্যাট করেছে তা অসাধারণ। তবে শেষ দিকে আরও ভালোভাবে শেষ করা যেত। শেষ তিন ওভারে আমরা বেশি রান তুলতে পারিনি।"
লিটন জানান, তিনি বোলারদের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখেন, এবং তারা সেটির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান শাকিব - এই ত্রয়ী মিলে ৭ উইকেট ভাগ করে নিয়ে আমিরাতকে ১৬৪ রানে আটকে দেয়।
"আমি সবসময় জানি আমার বোলাররা ফিরে আসতে পারে," বলেন লিটন। "তবে আমিরাতের ব্যাটারদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে, মাঝের ওভারে তারা ভালো ব্যাটিং করেছে। এখান থেকে আমাদের শিখতে হবে কোন ধরনের বল এই উইকেটে কাজ করে। শেষদিকে আমাদের বোলাররা যেভাবে ম্যাচে ফিরেছে, তা প্রশংসনীয়।"
দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আগামী ১৯ মে একই ভেন্যু শারজাহতে মুখোমুখি হবে স্বাগতিকদের সঙ্গে।